লিয়াকত হোসেন লিংকন: মঙ্গলবার (২১ মে) দ্বিতীয় ধাপে কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শেষ মুহূর্তে নির্বাচনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মাঝে বিপুল আগ্রহ ও তুমুল উত্তেজনা চলছে। চায়ের দোকান-আড্ডাখানায় চলছে বিচার-বিশ্লেষণ। তবে প্রার্থী ও ভোটারদের মাঝে নেই কোন অভিযোগ, শঙ্কা ও ভীতি। সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ হবে এমনটাই প্রত্যাশা জনগণের।
ভোটারদের দাবি, নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ত্রিমুখী লড়াই হবে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যদিয়েই জিততে হবে। তবে খুব অল্প ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা।
সহকারী রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন।
চেয়ারম্যান পদে দোয়াত কলম প্রতীকে কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন, আনারস প্রতীকে মুন্সী ফররুখ হোসাইন মিন্টু ও মোটর সাইকেল প্রতীকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কাজী নুরুল আমিন তুহিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সোহাগী রহমান মুক্তা, জিনাত রেহানা খান, শামচুন্নাহার মিনা জামান, তুলি আক্তার এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামিনুর রহমান জাপান, দীনবন্ধু মন্ডল, আবুল কালাম আজাদ কালু মিয়া ও সুলতান আহমেদ প্রতিদ্বিন্দ্বতা করছেন।
দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী বীরমুক্তিযোদ্ধা মোক্তার হোসেন বলেন, ‘আমি উপজেলার প্রতিটি এলাকার সাধারণ জনগণের বিপুল সাড়া পাচ্ছি। আমি অতীতে উপজেলাবাসীর সুখে-দুঃখে ছিলাম। বর্তমানে আছি, আগামীতেও থাকবো। আমি নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সকল সহযোগিতা ও অসমাপ্ত কাজগুলো বাস্তবায়ন করবো। আমি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।’
আনারস প্রতীকের প্রার্থী চেয়ারম্যান মুন্সী ফররুখ হোসাইন মিন্টু বলেন, ‘আলহামদুল্লাহ সবখানে ভোটারদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। দিন দিন আনারস প্রতীকের ভোট বাড়ছে। আমি তেমন কোন প্রতিশ্রুতি দিতে চাই না। আমি নির্বাচিত হলে জনগণের পাশে থাকবো, সব ধরণের সহযোগিতা করবো। আশা করি বিপুল ভোটের ব্যবধানে আনারস জয়ী হবে।’
মোটর সাইকেল প্রতীকের প্রার্থী কাজী নুরুল আমিন তুহিন বলেন, ‘আমার নির্বাচনী প্রস্তুতি অনেক ভালো। ১৪টি ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় সাধারণ মানুষের সাথে কুশল ও মতবিনিময় করেছি। তাদের পাশে আছি এবং খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আমি খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের সাথে মিশে থাকতে চাই। আমি ইনশাল্লাহ নির্বাচনে জয়ী হবো।’
উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নেই আলাদা আলাদা প্রভাব রয়েছে প্রার্থীদের। আঞ্চলিকতার প্রভাবে তিনজনের মধ্যেই ভোট ভাগাভাগি হবে। এছাড়া রাজনৈতিক সাংগঠনিক গুরুত্ব ও আত্মীয়করণের মাধ্যমে ভোট ভাগাভাগির নিয়েও রয়েছে সমীকরণ। ভোটের প্রচারে এগিয়ে থাকলেও; ভোটের পরে পাল্টে যেতে পারে ভোটের অঙ্ক। তাই ভোটাররা বলছেন, কোনো প্রার্থীর একতরফা ভোট পাওয়ার তেমন কোন সুযোগ নেই।
উপজেলার ৭৫টি কেন্দ্রে আগামী ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১, এরমধ্যে নারী ভোটার ৯৬ হাজার ১৮৩ এবং পুরুষ ভোটার ৯৭ হাজার ১৭৮ জন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা মো. রাশেদুজ্জামান জানান, সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
-লিয়াকত হোসেন লিংকন